মানুষ তার জীবনে অনেক কিছুকেই ভয় পায়। তবে কিছু মানুষের ভীতি নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর। একে ফোবিয়া বলা হয়। ফোবিয়া বা চরম ভীতি মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রাকে ব্যাহত করে। আসুন জেনে নেই কিছু ফোবিয়ার কথা--
১) Acrophobia (অ্যাক্রোফোবিয়া, উচ্চতাভীতি)- এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা উচু স্থানকে ভয় পায়। উচু যায়গায় গেলে তাদের মাথা ঘোরাসহ অন্য উপসর্গ দেখা দেয়।
২)Ablutophobia (অ্যাবলুটোফোবিয়া, গোসলভীতি)-শুনতে আবাক লাগতে পারে অ্যাবলুটোফোবিয়ায় আক্রান্তরা গোসল করতে ভয় পায়। মূলত গোসল করার সময় পূর্বের কোন খারাপ অভিঙ্গতা এর জন্য দায়ী।
৩)Agorophopia (অ্যাগরোফোবিয়া, উন্মুক্তস্থানভীতি)- খোলা স্থান যেমন বিস্তৃন মাঠে থাকতে ভয় পায়। আবদ্ধ বা জনাকীর্ণ স্থানে থাকতে পছন্দ করে।
৫)Claustrophobia (ক্লাস্টোফোবিয়া, বদ্ধস্থানভীতি)-অ্যাগরোফোবিয়া এর বিপরীত, আবদ্ধ স্থানে থাকতে ভয় পায়।
৬)Nephophobia (নেফোফোবিয়া, মেঘভীতি)-নেফোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি মেঘের ভয়ে আতঙ্কিত থাকে সারাক্ষণ। এমনকি তারা আকাশের দিকে তাকাতেও ভয় পায়। এই ফোবিয়ার কাছাকাছি আরেকটি ফোবিয়া আছে যার নাম অ্যানাবলফোবিয়া। অ্যানাবলফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি উপরের দিকে তাকাতে ভয় পায়। আকাশ, বাড়ির ছাদ, উচু গাছ, এমনকি উঁচু বিল্ডিংয়ের দিকে তাকাতেও ভয় পায় তারা।
৭) Spectrophobia (স্পেকট্রোফোবিয়ায়, আয়নাভীতি)-স্পেকট্রোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন আয়নার ভয়ে দূর্দশাগ্রস্থ হয়ে ওঠে। আক্রান্ত ব্যক্তি আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বকে ভীষণ ভয় পায়। এই ফোবিয়ার ভিকটিম নিজের ব্যক্তিসত্ত্বা নিয়ে আতঙ্কে থাকে অথবা নিজের ত্বকের দাগ সহ্য করতে পারেনা। অনেকের আবার ভয়ঙ্কর কোন অতীত ঘটনা থেকেও আয়না-ভীতি তৈরি হয়। মূলত, পূর্বে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনার ছাপ তাদের মনে থেকে গিয়ে আয়না-ভীতি তৈরি করে।
৮)Anthophobia (অ্যান্থোফোবিয়া, ফুলভীতি)-শুনে মনে হতে পারে ফুলকে আবার কেউ ভয় পায় নাকি! কিন্তু পৃথিবীতে কিছু মানুষ ফুলের ভয়ে আতঙ্কিত থাকে সারাক্ষণ। এই ধরনের মানুষ ফুল দেখলে বা ফুলের আশে পাশে থাকলে একধরণের মানসিক চাপ অনুভব করে। অনেকে আবার পুরো ফুলটাকে ভয় না পেয়ে ফুলের বিশেষ কোনো অংশ যেমন পাপড়ি বা রেণু ভয় পায়।
৯)Hedonophobia (হেডোনোফোবিয়া, আনন্দভীতি)-শুনতে অদ্ভুত শোনালেও এটাই সত্যি, পৃথিবীর কিছু মানুষের আনন্দভীতি আছে। এ ফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি উপভোগ্য মূহূর্তগুলোকে ভয় পায়। তারা আনন্দ পেতে ও প্রকাশ করতে ভয় পায়। এ ধরণের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সমাজের সবার থেকে আলাদা থাকতে পছন্দ করে। তাই তাদের স্বাভাবিক সামাজিক জীবন-যাত্রা ব্যাহত হয়।
১০)Heliophobia (হেলিওফোবিয়া,সূর্যের আলোভীতি)-হেলিওফোবিয়া হলো সূর্য-রশ্মি ভীতি। এই ফোবিয়ায় আক্রান্ত হলে ব্যক্তি সূর্য-রশ্মিকে ভয় পায়। স্কিন ক্যান্সার বা রোদে পুড়ে যাওয়ার ভয় থেকে হেলওফোবিয়ার সৃষ্টি হয়। দিনের বেলা তারা ঘরের ভেতরে রুম অন্ধকার করে থাকে এবং কখনোই সূর্যের আলোতে বাইরে বের হয় না। সামান্য সূর্য-রশ্মি ঘরে ঢুকলেও তারা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পরে।
আরো কিছু ভীতি
Bathophobia(ব্যাথোফোবিয়া)-গভীরতা ভীতি।
Cynophobia(সায়নোফোবিয়া)-কুকুর ভীতি।
Caligynophobia(ক্যালিগাইনোফোবিয়া)-সুন্দরনারী ভীতি!!!!
Hippophobia(হিপ্পোফোবিয়া)-ঘোড়া ভীতি।
Xanthophobia (জ্যান্থোফোবিয়া)-হলুদ রং ভীতি।
Ornithophobia (অরনিথোফোবিয়া)-পাখিভীতি।
Thalassophobia(থ্যালাসোফোবিয়া)-সমুদ্র ভীতি।
Necrophobia (নেকরোফোবিয়া)-মৃত্যুভীতি।
পাশ্চাত্যে ১৩ কে অপয়া সংখ্যা মনে করা হয়। এই অপয়া ১৩ সংখ্যা ভীতিকে Tomophobia(টমোফোবিয়া) বলা হয়।
যে কোন ধরণের ফোবিয়াই একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাত্রাকে ব্যহত করে দেয়। ফোবিয়া একজন মানুষের সামাজিক, ব্যক্তিগত ও কর্মক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই ফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবহেলা না করে মানসিকভাবে সহায়তা করা উচিত।
No comments:
Post a Comment